রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস ও ঘাড়ব্যথার চিকিৎসা

সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস ও ঘাড়ব্যথার চিকিৎসা

অধ্যাপক ডা. হারাধন দেব নাথ

মানুষমাত্রই জীবনের কোনো না কোনো এক সময় ঘাড়ব্যথায় ভুগে থাকেন। কারণ ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। যে কোনো কারণেই ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। আবার এ ব্যথা হতে পারে যে কোনো বয়সী মানুষ অর্থাৎ নারী-পুরুষ উভয়েরই। এর মানে হলো, অল্প বয়সী মানুষও ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করতে পারে।

কম বয়সীদের ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার প্রধান কারণ হলো, muskuloskeletal. যদি কেউ দুর্ঘটনাজনিত কারণে ঘাড়ে আঘাত পান বা Abnormal position-এ ঘুমান কিংবা কোনো ভারী জিনিস উত্তোলন করেন, তখন ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এমনকি মেরুদণ্ডেরও অনেক ক্ষতিও হতে পারে।

ঘাড়ে ব্যথায় সাধারণত চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী মানুষ বেশি ভুগে থাকেন। এ বয়সে এ রোগে বেশি আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ হলো, বয়স ৪০ বছরের পর মেরুদণ্ডের হাড় প্রথমে ক্ষয় হতে শুরু করে। পরে ক্যালসিয়াম জমে কাঁটার মতো করে হাড় বাড়তে থাকে। এর নাম স্পন্ডাইলোসিস। এর ফলে নার্ভের চলার পথে চাপ পড়ে। নার্ভের রক্তসঞ্চালন কমে যেতে থাকে। আর এতে নার্ভের মারাত্মক ক্ষতি হয়। স্নায়ুরজ্জুতেও প্রচণ্ড চাপ পড়ে। ফলে স্নায়ুরজ্জু ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আর এতে রোগী ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করতে থাকেন। এ ব্যথা ক্রমে হাতে চলে যেতে থাকে। হাত ও পায়ে ছড়িয়ে পড়ার পর হাত-পা ঝিনঝিন করতে থাকে। অনেক সময় হাত-পা অবশ হয়ে যায়। রোগ বেশি পুরনো হলে রোগীর হাত-পা প্যারালাইসিসও হতে পারে। তখন প্রস্রাব ও মলত্যাগ আটকে যেতে পারে অথবা রোগী তা ধরে রাখতে পারেন না। এ রোগের কারণে অনেক সময় রোগীর যৌন সমস্যা দেখা দেয়।

কথায় বলে, Prevention is better then cure. অর্থাৎ রোগ হওয়ার আগেই সাবধান হতে হবে। অনেকে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েন। এটা কোনো ভালো অভ্যাস নয়। গাড়িতে ঘুমানোর প্রয়োজন হলে অবশ্যই ঘাড়ে সার্ভাইক্যাল কলার পড়ে নিতে হবে। নিচু বালিশ ও শক্ত বিছানায় ঘুমাতে হবে। নিয়মিত ঘাড়ের ব্যায়াম করতে হবে। উপুড় হয়ে ঘুমানো উচিত নয়। ঘাড়ে ভারী জিনিস নেওয়া যাবে না।

ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো- cervical disc prolapse,spinal TB, spinal fracture. সার্ভাইক্যাল ডিস্ক প্রোলাপস হলে MRI ofcervical spine, X-ray of cervical spine করে রোগ নির্ণয় করতে হবে।

ঘাড়ব্যথার প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসা হলো- ঘাড়ে কলার পরা, ব্যথার ওষুধ ভরাপেটে সেবন করা। ওষুধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- Tab Naprosyn 500mg (1+0+1) 15 days এর সঙ্গে Cap saclo 20mg (1+0+1) 30 days, Tab Mayonil (1+0+1) 30 days, খেতে হবে। একইসঙ্গে ফিজিওথেরাপিও করতে হবে। কোনো কারণে ভালো না হলে অঈউঋ নামক ঘাড়ের অপারেশন করাতে হতে পারে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ, দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে micrpscopic ACDF করা হয়ে থাকে। এ অপারেশনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।

লেখক : অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চেম্বার : ল্যাবএইড লিমিটেড, ধানমন্ডি, ঢাকা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877